সুস্থ জীবন কে না চায়? কিভাবে শরীরটাকে একটু ভালো রাখা যায় তা নিয়ে তো আমরা সবাই ভাবি। কিন্তু মনটাকে সুস্থ রাখার কথা কি ভেবেছি কোনদিন? সুস্থ সুন্দর জীবনের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকাটা অপরিহার্য। কেননা মানসিক অবস্থা খারাপ থাকলে এর প্রভাব পড়বে শরীরেও। কিছু ইতিবাচক অভ্যাস মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। আসুন জেনে নিই তেমনই ১০টি ইতিবাচক অভ্যাসের কথা।
১.নিজেকে ভালবাসুন
আপনি যদি নিজেকে ভালবাসতে না পারেন তবে অন্য কারো ভালোবাসা আশা করাটা নিঃসন্দেহে বোকামি। নিজেকে শ্রদ্ধা করুন, এতে মনের জোর বাড়ে। নিজেকে ভালবাসতে পারলে হীনমন্যতায় ভুগবেন না। বাড়বে আত্মবিশ্বাস। বদলে যাবে আপনার পৃথিবী। নিজেকে সময় দিন।‘আমার আমি’কে জানার চেষ্টা করুন। জানুন কি আপনার হৃদয়ের খুব কাছের আর কি আপনি এড়িয়ে চলতে ভালোবাসেন।
২.স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন
সুস্থ দেহ আর সুস্থ মন একে অপরের পরিপূরক। আমরা বেশিরভাগ সময়েই রোগ বাসা বাঁধার আগ পর্যন্ত শরীর নিয়ে সচেতন হইনা।কিন্তু প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। তাই সচেতন হোন আগে থেকেই। শরীর ভালো রাখতে গড়ে তুলতে পারেন সহজ কিছু অভ্যাস।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন
- মাদক দ্রব্য, কোমল পানীয়, শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন
- দৈনিক কমপক্ষে ৭ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন
- নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। না পারলে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন।
- হাসুন প্রাণখুলে
৩.ব্রেইনকে বিশ্রাম দিন
মাঝে কাজ থেকে অবসর নেওয়ার পাশাপাশি ব্রেইনকেও বিশ্রাম দিন। অতিরিক্ত চিন্তা বাদ দিন। ব্রেইনের খানিকটা বিশ্রাম আপনাকে নতুন করে কাজ করার অনুপ্রেরণা দেবে।
৪.রুটিনটাকে ঢেলে সাজান
প্রতিদিন একই ধরণের কাজ করতে করতে আমাদের মাঝে একঘেয়েমি চলে আসে। তাই মাঝে মাঝে রুটিনটাকে ঢেলে সাজাতে পারেন। একই কাজ করতে পারেন ভিন্ন আঙ্গিকে।এতে করে কাজে যেমন উৎসাহ পাবেন তেমনি ভালো থাকবে মানসিক স্বাস্থ্য।
৫.দিতে শিখুন এবং সাহায্য নিন
কিছু দিতে পারার আনন্দ সবসময়ই অসাধারণ। এমনটা নয় যে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে আপনাকে অনেক বেশি দান খয়রাত খয়রাত করতে হবে। অন্যের মুখে হাসি ফোটায় এমন কিছু ছোটো ছোটো কাজ তো আপনি করতেই পারেন। আপনি দিতে পারেন একটু সময়, কিংবা আপনার কোন পরামর্শ এমনকি সেটা হতে পারে একটুখানি হাসিও। আর হ্যাঁ, প্রয়োজনে আপনজনের সাহায্য নিন।
৬.নিয়মিত ডায়েরি লেখার অভ্যাস
প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো লিখে রাখতে পারেন ডায়েরিতে। ডায়েরি লিখতে পারেন অনেকভাবেই। প্রতিদিনের অর্জন এবং ভুলগুলো টুকে রাখতে পারেন। অনেকে আবার ডায়েরিতে নিজের লক্ষ্যগুলো লিখে রাখেন। চিঠি লিখতে পারেন নিজেকেও! কি একটু অদ্ভুত লাগছে? একবার লিখেই দেখুন না।
৭. ভ্রমণ
শারীরিক কিংবা মানসিক, যেকোনো ক্লান্তি দূর করতে ভ্রমণের জুড়ি নেই। সপ্তাহে না পারলে মাসে অন্তত একদিন হলেও কোথাও ঘুরে আসার চেষ্টা করুন। প্রকৃতির সান্নিধ্যে কাটানো সময় আপনাকে দেবে নতুন করে বাঁচার প্রেরণা।
৮.তুলনা করুন নিজের সাথে
অন্যের সাথে নয় বরং তুলনা করুন নিজের সাথে নিজের। অন্যের সাফল্যে নিজের জন্য আফসোস করার কিছু নেই। প্রতিটি মানুষই আলাদা। বরং নিজের সাথে নিজের তুলনা করুন। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করুন।
৯.সময় দিন প্রিয়জনদের
পরিবার, বন্ধু সহ কাছের মানুষদের সময় দিন। সময় পেলে পরিবার বা বন্ধুদের সাথে কোন গেটটুগেদার কিংবা আড্ডায় যোগ দিতে পারেন। এতে হৃদ্যতা বাড়ে। এই সুসম্পর্ক আপনাকে মানসিক শক্তি জোগাবে।
১০.নতুন কিছু শেখা
নতুন নতুন বিষয় শেখার চেষ্টা করুন। সেটা হতে পারে নতুন কোন ভাষা, কোন মিউজিক ইনস্ট্রুমেন্ট কিংবা হতে পারে কোডিং বা ফটোগ্রাফি। কারো শখের কোন বিষয় থাকলে সেটি শিখে নিতে পারেন। একটু ভিন্ন আঙ্গিকে দারুণ কিছু মূহুর্ত পাবেন।
১১. বই পড়া
আর হ্যাঁ, অবশ্যই বই পড়ুন। সপ্তাহে অন্তত একটি বই পড়ার অভ্যাস আপনাকে যেমন সমৃদ্ধ করবে তেমনি ভালো রাখবে মানসিক স্বাস্থ্যকেও।
Cover photo credit: http://blog.fulfillinghappiness.com/
Leave a Reply