চাকুরিতে আবেদন করার সময় রেজিউমির সাথে অত্যাবশ্যকীয় যে জিনিসটি লাগে তা হল কভার লেটার। রেজিউমিতে জায়গাস্বল্পতার কারণে নিজের সম্পর্কে অনেক কথাই তুলে ধরা হয়না। একটু মাথা খাটিয়ে লিখতে পারলে কভার লেটারের মাধ্যমে তা অনেকটাই ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। কভার লেটার লেখার কিছু টিপস নিয়েই সাজানো হয়েছে এই লেখাটি।
সঠিক সম্বোধন
সঠিক সম্বোধন ব্যাবহার করুন। কার কাছে আবেদন করছেন সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য না থাকলে “Dear Sir or Madam” ব্যাবহার করাটা সবচেয়ে নিরাপদ।
শুরুটা হওয়া চাই আকর্ষণীয়
জব ডেসক্রিপশনটা ভালমতন পড়লে পুরো কভার লেটারটা কেমন হবে সে সম্পর্কে একটি ভালো আইডিয়া পেয়ে যাবেন। কি চাকুরি, কেমন লোক তাদের চাই সবই জব ডেসক্রিপশনে উল্লেখ করা থাকে। শুরুটা করুন জব ডেসক্রিপশন থেকে তথ্য নিয়ে। কোথায়, কি পদে আবেদন করছেন, কোথা থেকে জানলেন তা লিখুন। কেন নিজেকে ওই পদের জন্য কেন যোগ্য মনে করেন তা লিখুন। একটি গ্রহণযোগ্য কভার লেটারের প্রধান শর্ত হল সুন্দর একটা শুরু। বাক্য গঠনে মনযোগী হোন।
অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাগুলো লিখুন গল্পের মত করে
নিজের দক্ষতাগুলো তুলে ধরুন। তবে মনে রাখবেন আপনি যা তাই লিখুন, বাড়িয়ে লেখার দরকার নেই। আগে কোথায় কাজ করেছেন, কি শিখেছেন লিখুন। গৎবাঁধা কিছু লেখা থেকে বের হয়ে এসে স্বকীয় স্টাইলে অনেকটা গল্পের মত করে লিখুন। পুনরাবৃত্তি না করে অল্পকথায় ফুটিয়ে তুলুন আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা।
কেন আবেদন করছেন
কেন আবেদন করছেন এই জায়গাটিতে বেশিরভাগ সময়ই আমরা যে ভুলটি করি তা হল লিখি যে চাকুরীটি আমার খুব প্রয়োজন, এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারলে ধন্য হবো। এতে করে নিয়োগদাতা আপনার লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে কোন ধারণাই পাননা। এখানে বরং প্রতিষ্ঠানের কোন দিকটি আপনাকে আগ্রহী করেছে, যোগ দিয়ে আপনি কি করতে চান এবং আপনার দ্বারা প্রতিষ্ঠান কিভাবে উপকৃত হবে তা লিখুন। যাই লিখুন না কেন আপনার লেখায় যেন আপনার সততাটুকু ফুটে উঠে।
কোন ভুল নয়
ঠিকানা লিখুন সঠিক। অনেক সময় দেখা যায় যে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করছি সেইটির নামের জায়গাতেই ভুল করে ফেলি। এটা খুবই ছোট একটা ভুল কিন্তু এর প্রভাব মারাত্মক। যিনি পড়ছেন তিনি হয়তো পুরোটা পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন। এছাড়াও আছে বানান এবং ব্যাকরণগত ভুল। এই সব ভুল পরিহার করা অতি আবশ্যক। আর মিথ্যা কোন তথ্য কখনোই নয়।
এক কভার লেটার সব জায়গায় কখনোই নয়
আমরা বেশিরভাগ সময়ই এক কভার লেটারকে সামান্য কাটছাঁট করে বহুবার ব্যাবহার করি। এটি একেবারেই অনুচিত। প্রতিটি আবেদনের সময় আলাদাভাবে কভার লেটার লিখুন। কেননা সব প্রতিষ্ঠানের চাহিদা একরকম নয়।
সংক্ষিপ্ত কিন্তু সাবলীল
কভার লেটার অবশ্যই হতে হবে সংক্ষিপ্ত। এক পৃষ্ঠাতেই এর দৈর্ঘ্য সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। বাক্যের ফ্রেমিং সুন্দর হলে অল্প কথায়ই নিজের সম্পর্কে সুন্দরভাবে তুলে ধরা যায়। নিয়োগকর্তাও পড়তে যেয়ে বিরক্ত হন না।
কভার লেটার লিখতে সময় নিন। কেননা তাড়াহুড়া করে লিখলে ভুল হবার সুযোগ থাকে অনেক বেশি। আর অবশ্যই পাঠানোর আগে একবার রিভিশন দিন। একটি গ্রহণযোগ্য কভার লেটার আপনাকে ইন্টার্ভিউ বোর্ড পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে। দিতে পারে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ। তাই এ ব্যাপারে যত্নবান হোন। রাখুন স্বকীয়তা। আপনার কভার লেটারে উঠে আসুক আপনার গল্প।
Leave a Reply